ঢাকা, ২৩ মে বৃহস্পতিবারঃ জাতীয় মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা, বিএসটিআই -এর পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিম্নমানের ৫২ পণ্য বাজার থেকে অবিলম্বে না সরানোয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে তলব করেছেন উচ্চ আদালত।এসব খাদ্যপণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার ও জব্দে পূর্বে দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায়, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের প্রতি আদালত অবমাননার রুল দিয়েছেন উচ্চ আদালত। কেন তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার কার্যক্রম শুরু করা হবে না, তা জানাতে চেয়ারম্যানকে আগামী ১৬ জুন সশরীরে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (২৩ মে) এ আদেশ দেন। আগামী ১৬ জুন তাকে হাইকোর্টে হাজির হতে হবে। আদালতের আদেশ সংশোধন চেয়ে আবেদন করে ৫২ পণ্যের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। আদালত তা আমলে নেয়ার মতো কোনো যুক্তি খুঁজে পাননি। এ সময় আদালতকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, বিএসটিআই কর্তৃপক্ষ পুনঃপরীক্ষা শুরু করেছে।
মানহীন ৫২টি খাদ্যপণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার ও জব্দে হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা বাস্তবায়ন না করায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের প্রতি আদালত অবমাননার রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। কেন তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার কার্যক্রম শুরু করা হবে না, তা জানাতে চেয়ারম্যানকে আগামী ১৬ জুন সশরীরে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। ৫২ পণ্য প্রত্যাহার ও জব্দ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতিবিষয়ক শুনানিতে এ আদেশ দেওয়া হয়।
আজ বহুল আলোচিত এই শুনানিকালে উচ্চ আদালত নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলামকে ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “পণ্য জব্দ ও প্রত্যাহার করতে আদেশ দেওয়া হয়েছিল। আপনারা একটি মসলার প্যাকেট জব্দ করেননি। ভদ্রতারও একটি সীমা আছে। ভদ্রতাকে দুর্বলতা মনে করবেন না। আপনারা চিঠি দিয়েছেন, অনুরোধ করেছেন, কিন্তু পণ্য জব্দ বা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেননি। ইস্কাটনে আপনাদের কার্যালয়ের আশেপাশে ১৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ মিলেও একটি পণ্য জব্দ করতে পারলেন না? আপনাদের অফিস রাখার দরকার কী? ভয় পাচ্ছেন? বড় বড় ব্যবসায়ীরা কী করে ফেলেন। এসব ভাবলে চাকরি করার দরকার কী।”
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত আরও বলেন, “ব্যাংকে গিয়ে কেরানির চাকরি করতে বলেন তাঁদের। বসে বসে টাকা গুনবেন, টাকার হিসাব রাখবেন। নইলে ঘরে গিয়ে রান্নাবান্নার কাজ শুরু করে দেন।”
একই আদালতে আজ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। আইনজীবী কামরুজ্জামান কচির দাখিলকৃত পৃথক প্রতিবেদনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আদালত বলেছেন, “আমরা আশা করছি বছরজুড়ে প্রতিষ্ঠানটি এমন কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।”
উল্লেখ্য, আদালতে এ সময় প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের পক্ষে এম কে রহমান, এসিআই’র পক্ষে ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, সান চিপসের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম এবং বাঘাবাড়ী ঘিয়ের পক্ষে মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী শুনানি করেন।